অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম হত্যা মামলায় সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৪ মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম এ রায় দেন। জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আক্কেলপুরের বেগুনবাড়ি গ্রামের মৃত হজরত আলী সরদারের ছেলে ফরহাদ আলী সরদার ওরফে ঝন্টু, দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল মাহমুদ তারিক, জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে তৌফিকুল ইসলাম, মৃত মনির উদ্দিন সরদারের ছেলে ডুয়েল ওরফে বখতিয়ার, দেলোয়ার হোসেনের ছেলে হাসিবুল হাসান, মামুনুর রশিদের ছেলে সোহাগ ও কানুপুর গ্রামের ওসমান আলী সরদারের ছেলে আ. গফুর।
এদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত ডুয়েল ওরফে বখতিয়ার ঢাকা সেনানিবাসের নায়েব সুবেদার ও হাসিবুল হাসান লালমনিরহাট ১৯ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সিপাহি পদে কর্মরত। আসামিদের মধ্যে আ. গফুর ও সোহাগ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্য পাঁচ আসামিকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, আক্কেলপুর উপজেলার দক্ষিণ কানুপুর এলাকার আফসার আলীর ছেলে আব্দুর রহিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এমএ ক্লাসের ছাত্র ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকতেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন। পার্শ্ববর্তী বেগুনবাড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে তার যাতায়াত ছিল। মাঝেমধ্যে রাতে তাদের বাড়িতেই থাকতেন। আবার রাত গভীর হলে দেলোয়ারের বাড়ির লোকজন আব্দুর রহিমকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিত। দেলোয়ারের মেয়ে দোলার সঙ্গে আব্দুর রহিমের বিয়ের কথা চলছিল।
কিন্তু ওই গ্রামের ফরহাদ আলী সরদার ওরফে ঝন্টু দোলাকে বিয়ে করবে বলে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আব্দুর রহিমকে শাসায় এবং দেলোয়ারে বাড়িতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপরও আব্দুর রহিম গত ২০০০ সালের ১১ জানুয়ারি দেলোয়ারের স্ত্রী জেবুন্নেছার সঙ্গে তাদের বাড়িতে যায়। কিন্তু রাত পার হলে আব্দুর রহিম নিজ বাড়িতে আসেনি। পরের দিন সকালে তার পরিবারের লোকজন খবর পান আব্দুর রহিমের মরদেহ একটি পুকুরের পাশে রাস্তার ধারে পড়ে আছে। সংবাদ পেয়ে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুর রহিমের রক্তাক্ত মরদেহ শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আসাদুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন আক্কেলপুর থানা পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব উল আলম। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ২২ অক্টোবর আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
Leave a Reply